✍️ বীরত্বের নিশান ✍️
কেরমানের বাদশাহ বড় দানশীল ও মেহমান নওয়াজ ছিলেন। ওনার মেহমানখানা বড় ছোট সকলের জন্য সদা খোলা থাকতো। যে কেউ ওনার শহরে প্রবেশ করলে, শুনার মেহমান হতো। মেহমানখানা থেকে নিয়মিত সকালের নাস্তা ও রাত্রের খাবার সরবরাহ করা হতো। একবার আজদুদ্দৌলা কেরমান শহর আক্রমন করে। বাদশাহ সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ না হয়ে একটি কিল্লায় আশ্রয় নিয়ে প্রতিরোধ করতে থাকে। সারাদিন যুদ্ধ চলতো এবং রাত্রে যখন যুদ্ধ বিরতি হতো, তখন কেরমানের বাদশাহ শত্রুবাহিনীর সকলের জন্য খাবার পাঠিয়ে দিতেন। আজদুদ্দৌলা দূত মারফত জানতে চাইলো, ব্যাপার কি, সারাদিন আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আবার রাত্রে আমাদের জন্য খাবার পাঠিয়ে দেয়। বাদশাহের পক্ষে জানানো হলো যে, যুদ্ধ করাটা হচ্ছে বীরত্বের প্রকাশ এবং খাবার পরিবেশনটা হচ্ছে বীরত্বের নিশান। বাদশাহ মনে করে যে শত্রু হলেও এরা মুসাফির এবং এটা ভদ্রতার খেলাপ যে কোন মুসাফির শুনার শহরে অবস্থান করে নিজের খাবার খাবে। এ কথা শুনে আজদুদ্দৌলা কেঁদে দিল এবং বললো এ ধরনের ভদ্র ও দানশীল ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাটা হচ্ছে অভদ্রোচিত ও অমানুষিক আচরণ। অতঃপর সে অবরোধ উঠিয়ে নিল এবং কোন জুলুম অত্যাচার না করে ফিরে চলে গেল ।
(তালিমুল আখলাক ৫০৮ পৃঃ)
সবকঃ যে কাজ সদাচরন ও ভদ্রতার মাধ্যমে করা যায় সেটা ইস্পাতের তলোয়ারের দ্বারা করা যায় না।