ভাট বা ঘেটু
যে নামে পরিচিতঃ
হিন্দিতে - ভাটফুল, উর্দুতে - ভাট , তামিলে পেরুগিলাই , মালয়ে - পেরুক , সংস্কৃতে - ঘন্টাকর্ন ও ভটকি , আর বাংলায় বলে ঘেঁটু বা ভাঁট ।ভেক পাতা চাকমা,বিগ ঘাস ত্রিপুরা, ভেকগাছ তঞ্চঙ্গা
গাছের পরিচয়ঃ
পাহাড়ি ভাঁটফুল বা ঘেটু গুল্ম জাতীয় দেশি বুনো পুষ্পক উদ্ভিদ। ফুল গাছটি ভাঁট বলে পরিচিত হলেও স্থানভেদে এবং ভিন্ন ভিন্ন জনগোষ্ঠীতে এর ভিন্ন ভিন্ন নামও রয়েছে। অনেকে একে বনজুঁই বলেন। কোথাও বলা হয় ভাঁটি, কোথাও ঘণ্টকর্ণ। সংস্কৃতে একে বলে ঘণ্টা, ঘণ্টাকর্ণ, বাণবিড়। ভাট একটি বুনো ফুল, পথের ধারে জংলা যায়গায়, গায়ের মাঠের ধারে অযত্নে ফুটে থাকে এই ফুল। এক এক ঋতুতে ভাঁট গাছে একেক রঙ নেয়। ঋতু পরিবর্তনে ফুলের গন্ধেও পরিবর্তন আসে। গাঢ় সবুজ গাছগুলো বর্ষায় পাতা মেলে নতুন রূপে সেজে ওঠে। আদর করে কেউ বাগানে রোপণ
করে না। আর ফুলটি সুবাস ছাড়ে রাতে। দিনের বেলা শুকে দেখেছি হালকা সুবাস থাকে তখনও, তবে ছড়ায় না। ফুল ফোটার পর মৌমাছিরা ভাঁট ফুলের মধু সংগ্রহ করে।
জন্মস্থানঃ
গ্রাম-বাংলার পথঘাট মাঠের চিরচেনা এই ভাঁটফুল। বাংলাদেশের সর্বত্র কম-বেশি এর বিস্তৃতি আছে। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের বনাঞ্চল ও পাহাড়ের আঁকাবাঁকা রাস্তার পাশে ভাঁট গাছ বেশি দেখা যায়। সাধারণত পথের ধারেই ভাঁট গাছ জন্মে থাকে। বেড়ে ওঠে অবহেলা আর অনাদরে। গ্রামের মেঠো পথের ধারে, পতিত জমির কাছে এরা জন্মে থাকে এবং কোনরূপ যত্ন ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে। এছাড়াও পাহাড়ি বনের চূড়ায় এবং পাহাড়ি ছড়ার পাশে এদের উপস্থিতি বিশেষভাবে লক্ষনীয়।
বীজ থেকে চারা হয় এ ছাড়াও কন্দ থেকে চারা হয়।
গাছের ব্যবহারঃ
ভাঁটের রয়েছে ঔষধি গুণ। ভাঁট হলো গ্রামবাংলার পথের ওষুধ। দেশের সর্বত্র আদিবাসী ও বাঙালি সমাজে এর ব্যবহার আছে। গ্রামের কবিরাজরা নানা কাজে ভাঁটের পাতা, কাণ্ড ও শেকড় ব্যবহার করেন। কেবলমাত্র মানুষ নয়, গরু-ছাগলের চিকিৎসাতেও ভাঁটের মূল ও পাতা কাজে লাগে। পুরনো ভাঁট গাছের ঝোপ ছোট পাখি ও খুদে সরীসৃপদের বাসস্থান। কোথাও কোথাও এ ফুল দিয়ে ঘণ্টাকর্ণ ও ভাঁটি পূজা হয়। এই ফুল রোগবালাই ও আপদবিপদ দূর করে বলে অনেকে বিশ্বাস করেন। এদের রস তিতা বলে সহজে কেউ খেতে চায় না।
যে সকল রােগের উপশম হয়ঃ
1️⃣ যে কোন চর্মরােগঃ অঙ্গের যে কোন চর্মরােগে ভাট পাতাকে ঘেঁতাে করে রাতে শােবার সময় প্রলেপ দিয়ে পরিষ্কার পাতলা কাপড়ের ফালি দিয়ে বেঁধে রাখতে হবে । চার থেকে পাঁচ দিন প্রয়ােগ করলেই চর্মরােগ কমে যাবে ।
2️⃣ ম্যালেরিয়াঃ এ রােগে বিশেষ করে ছােট ছেলে মেয়েদের খুবই ভাল কাজ দেয় দিনে তিন বার ২ চামচ করে টাটকা পাতার রস খাওয়াতে হবে
3️⃣ কাঁকড়া বিছের কামড়ে ঘেটু গাছের পাতা এবং ফুল সামান্য পানি দিয়ে শিলে বেটে দংশনের জায়গায় প্রলেপ দিতে হবে । এতে যন্ত্রণা কমবে এবং বিষও নষ্ট হবে ।
4️⃣ টিউমার হলে ঘেঁটু গাছের মূল বেটে টিউমারের ফোলা অংশে ভালভাবে প্রলেপ দিয়ে তার ওপর কাপড়ের ফলি জড়িয়ে রাখা দরকার ।নিয়মিত কয়েক দিন প্রয়ােগ করতে হবে তবে প্রলেপ সব সময় বাহ্য প্রয়ােগ করা দরকার ।
5️⃣ কোষ্ঠবদ্ধতায়ঃ ৩০ মিলিলিটার পরিমাণ ঘেঁটু পাতার রস সকালে খালিপেটে খেলে পেট পরিষ্কার হয়ে যায় তবে এ পরিমাণ বয়স্ক মানুষের জন্য শিশু বা বালকদেরকে এর অর্ধেক পরিমাণ একইভাবে খাওয়াতে হবে গাছের ডালের ওপরের দিকের কচি পাতা সংগ্রহ করে পরিষ্কার শিলে অল্প পানি দিয়ে বেটে রস বের করা দরকার ।
6️⃣ পেটের যন্ত্রণাঃ পেটে মল জমলে কিংবা দীর্ঘদিন ধরে হজমের গােলমালে ভুগলে মাঝে মাঝে পেটে যন্ত্রণা করে ৫ - ৭ গ্রাম ঘেঁটুর মূলের এক গ্লাস ঘােলের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে যন্ত্রণা থাকে না ।
7️⃣ ক্রিমির উৎপাতে ও ঘেটু পাতার রস খুবই তেতাে অনেক বৈদ্য চিরতার পরিবর্তে এটা ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে থাকেন । এতে ক্রিমি মরে যায় । পেটে যদি ছােট আকারের ক্রিমি হয় , তাহলে মলদ্বার দিয়ে পিচকারি দিলে সব ছােট ক্রিমি মরে যাবে ।
8️⃣ শরীরে বল বৃদ্ধি ও দীর্ঘ রােগভােগের পর শরীর দুর্বল হলে ঘেঁটু পাতার রস রােজ তিন - চার চামচ পরিমাণ খেলে , শরীরে দ্রুত পূর্বের বল ফিরে আসবে ।
9️⃣ দীর্ঘদিন ধরে শরীরে জ্বর লেগে থাকলে,
গেটেবাতে ও আমাশয় ও পেট ব্যথায় ভাঁটের কচি ডগার রস কয়েক দিন সকালে খেলে রোগ ভালো হয়ে যায়।
🔟 উকুন হলে ভাঁট পাতার রস লাগিয়ে ১ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলবেন উকুন থাকবে না
1️⃣1️⃣ অনেকে দাঁত ব্রাশে মেছওয়াক হিসেবেও এ গাছের মূল ব্যবহার করেন।
হিন্দিতে - ভাটফুল, উর্দুতে - ভাট , তামিলে পেরুগিলাই , মালয়ে - পেরুক , সংস্কৃতে - ঘন্টাকর্ন ও ভটকি , আর বাংলায় বলে ঘেঁটু বা ভাঁট ।ভেক পাতা চাকমা,বিগ ঘাস ত্রিপুরা, ভেকগাছ তঞ্চঙ্গা
গাছের পরিচয়ঃ
পাহাড়ি ভাঁটফুল বা ঘেটু গুল্ম জাতীয় দেশি বুনো পুষ্পক উদ্ভিদ। ফুল গাছটি ভাঁট বলে পরিচিত হলেও স্থানভেদে এবং ভিন্ন ভিন্ন জনগোষ্ঠীতে এর ভিন্ন ভিন্ন নামও রয়েছে। অনেকে একে বনজুঁই বলেন। কোথাও বলা হয় ভাঁটি, কোথাও ঘণ্টকর্ণ। সংস্কৃতে একে বলে ঘণ্টা, ঘণ্টাকর্ণ, বাণবিড়। ভাট একটি বুনো ফুল, পথের ধারে জংলা যায়গায়, গায়ের মাঠের ধারে অযত্নে ফুটে থাকে এই ফুল। এক এক ঋতুতে ভাঁট গাছে একেক রঙ নেয়। ঋতু পরিবর্তনে ফুলের গন্ধেও পরিবর্তন আসে। গাঢ় সবুজ গাছগুলো বর্ষায় পাতা মেলে নতুন রূপে সেজে ওঠে। আদর করে কেউ বাগানে রোপণ
করে না। আর ফুলটি সুবাস ছাড়ে রাতে। দিনের বেলা শুকে দেখেছি হালকা সুবাস থাকে তখনও, তবে ছড়ায় না। ফুল ফোটার পর মৌমাছিরা ভাঁট ফুলের মধু সংগ্রহ করে।
জন্মস্থানঃ
গ্রাম-বাংলার পথঘাট মাঠের চিরচেনা এই ভাঁটফুল। বাংলাদেশের সর্বত্র কম-বেশি এর বিস্তৃতি আছে। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের বনাঞ্চল ও পাহাড়ের আঁকাবাঁকা রাস্তার পাশে ভাঁট গাছ বেশি দেখা যায়। সাধারণত পথের ধারেই ভাঁট গাছ জন্মে থাকে। বেড়ে ওঠে অবহেলা আর অনাদরে। গ্রামের মেঠো পথের ধারে, পতিত জমির কাছে এরা জন্মে থাকে এবং কোনরূপ যত্ন ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে। এছাড়াও পাহাড়ি বনের চূড়ায় এবং পাহাড়ি ছড়ার পাশে এদের উপস্থিতি বিশেষভাবে লক্ষনীয়।
বীজ থেকে চারা হয় এ ছাড়াও কন্দ থেকে চারা হয়।
গাছের ব্যবহারঃ
ভাঁটের রয়েছে ঔষধি গুণ। ভাঁট হলো গ্রামবাংলার পথের ওষুধ। দেশের সর্বত্র আদিবাসী ও বাঙালি সমাজে এর ব্যবহার আছে। গ্রামের কবিরাজরা নানা কাজে ভাঁটের পাতা, কাণ্ড ও শেকড় ব্যবহার করেন। কেবলমাত্র মানুষ নয়, গরু-ছাগলের চিকিৎসাতেও ভাঁটের মূল ও পাতা কাজে লাগে। পুরনো ভাঁট গাছের ঝোপ ছোট পাখি ও খুদে সরীসৃপদের বাসস্থান। কোথাও কোথাও এ ফুল দিয়ে ঘণ্টাকর্ণ ও ভাঁটি পূজা হয়। এই ফুল রোগবালাই ও আপদবিপদ দূর করে বলে অনেকে বিশ্বাস করেন। এদের রস তিতা বলে সহজে কেউ খেতে চায় না।
যে সকল রােগের উপশম হয়ঃ
1️⃣ যে কোন চর্মরােগঃ অঙ্গের যে কোন চর্মরােগে ভাট পাতাকে ঘেঁতাে করে রাতে শােবার সময় প্রলেপ দিয়ে পরিষ্কার পাতলা কাপড়ের ফালি দিয়ে বেঁধে রাখতে হবে । চার থেকে পাঁচ দিন প্রয়ােগ করলেই চর্মরােগ কমে যাবে ।
2️⃣ ম্যালেরিয়াঃ এ রােগে বিশেষ করে ছােট ছেলে মেয়েদের খুবই ভাল কাজ দেয় দিনে তিন বার ২ চামচ করে টাটকা পাতার রস খাওয়াতে হবে
3️⃣ কাঁকড়া বিছের কামড়ে ঘেটু গাছের পাতা এবং ফুল সামান্য পানি দিয়ে শিলে বেটে দংশনের জায়গায় প্রলেপ দিতে হবে । এতে যন্ত্রণা কমবে এবং বিষও নষ্ট হবে ।
4️⃣ টিউমার হলে ঘেঁটু গাছের মূল বেটে টিউমারের ফোলা অংশে ভালভাবে প্রলেপ দিয়ে তার ওপর কাপড়ের ফলি জড়িয়ে রাখা দরকার ।নিয়মিত কয়েক দিন প্রয়ােগ করতে হবে তবে প্রলেপ সব সময় বাহ্য প্রয়ােগ করা দরকার ।
5️⃣ কোষ্ঠবদ্ধতায়ঃ ৩০ মিলিলিটার পরিমাণ ঘেঁটু পাতার রস সকালে খালিপেটে খেলে পেট পরিষ্কার হয়ে যায় তবে এ পরিমাণ বয়স্ক মানুষের জন্য শিশু বা বালকদেরকে এর অর্ধেক পরিমাণ একইভাবে খাওয়াতে হবে গাছের ডালের ওপরের দিকের কচি পাতা সংগ্রহ করে পরিষ্কার শিলে অল্প পানি দিয়ে বেটে রস বের করা দরকার ।
6️⃣ পেটের যন্ত্রণাঃ পেটে মল জমলে কিংবা দীর্ঘদিন ধরে হজমের গােলমালে ভুগলে মাঝে মাঝে পেটে যন্ত্রণা করে ৫ - ৭ গ্রাম ঘেঁটুর মূলের এক গ্লাস ঘােলের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে যন্ত্রণা থাকে না ।
7️⃣ ক্রিমির উৎপাতে ও ঘেটু পাতার রস খুবই তেতাে অনেক বৈদ্য চিরতার পরিবর্তে এটা ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে থাকেন । এতে ক্রিমি মরে যায় । পেটে যদি ছােট আকারের ক্রিমি হয় , তাহলে মলদ্বার দিয়ে পিচকারি দিলে সব ছােট ক্রিমি মরে যাবে ।
8️⃣ শরীরে বল বৃদ্ধি ও দীর্ঘ রােগভােগের পর শরীর দুর্বল হলে ঘেঁটু পাতার রস রােজ তিন - চার চামচ পরিমাণ খেলে , শরীরে দ্রুত পূর্বের বল ফিরে আসবে ।
9️⃣ দীর্ঘদিন ধরে শরীরে জ্বর লেগে থাকলে,
গেটেবাতে ও আমাশয় ও পেট ব্যথায় ভাঁটের কচি ডগার রস কয়েক দিন সকালে খেলে রোগ ভালো হয়ে যায়।
🔟 উকুন হলে ভাঁট পাতার রস লাগিয়ে ১ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলবেন উকুন থাকবে না
1️⃣1️⃣ অনেকে দাঁত ব্রাশে মেছওয়াক হিসেবেও এ গাছের মূল ব্যবহার করেন।